HS 2025 Geography Soil Suggestion Question Answer - উচ্চমাধ্যমিক 2025 ভূগোল মৃত্তিকা সাজেশন প্রশ্ন ও উত্তর
মৃত্তিকা সম্পর্কিত উচ্চমাধ্যমিক ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও তাদের উত্তর নিচে দেওয়া হলো:-
এই দ্বাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর – WBCHSE Class 12 Geography Question and Answer, Suggestion, Notes –
মৃত্তিকা (দ্বিতীয় অধ্যায়) থেকে বহুবিকল্পভিত্তিক, সংক্ষিপ্ত, অতিসংক্ষিপ্ত এবং রোচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর । West Bengal Class 12th Twelve XII Geography Examination
MCQ, Very Short, Short, Descriptive Question and Answer
গুলি আগামী পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য খুব ইম্পর্টেন্ট।
Soil / মৃত্তিকা
প্রশ্ন ১: মৃত্তিকা কী?
উত্তর:- মৃত্তিকা হল পৃথিবীর উপরিভাগের একটি স্তর যা বিভিন্ন প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার ফলে গঠিত হয় এবং এতে জীবিত এবং অজীবিত উপাদান মিশ্রিত থাকে।
এটি উদ্ভিদ এবং অন্যান্য জীবের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে।
প্রশ্ন ২: মৃত্তিকার গঠন প্রক্রিয়া কীভাবে হয়?
উত্তর:- মৃত্তিকা গঠনের প্রক্রিয়া প্রধানত তিনটি ধাপে বিভক্ত:
1. পাথরের ভাঙন:- পাথরের উপর বিভিন্ন আবহাওয়া, জল, তাপমাত্রার পরিবর্তন, এবং জীববৈচিত্র্যের প্রভাবের ফলে ভাঙন ঘটে।
2. পচন প্রক্রিয়া:- উদ্ভিদ ও প্রাণীর মৃতদেহ পচে মাটির সঙ্গে মিশে পুষ্টি সরবরাহ করে।
3. জীববৈচিত্র্যের ভূমিকা:- মৃত্তিকায় জীববৈচিত্র্য যেমন কীটপতঙ্গ ও মাইক্রোঅর্গানিজমের মাধ্যমে মৃত্তিকার গঠন ও পুষ্টি সংরক্ষণ হয়।
প্রশ্ন ৩: মৃত্তিকার প্রধান উপাদানসমূহ কী কী?
উত্তর:- মৃত্তিকার প্রধান উপাদানসমূহ হল:
A. খনিজ পদার্থ (৪৫%)
B. জৈব পদার্থ (৫%)
C. জল (২৫%)
D. বায়ু (২৫%)
প্রশ্ন ৪: মৃত্তিকার প্রকারভেদ কী কী?
উত্তর:- মৃত্তিকার প্রধান প্রকারভেদ হল:
1. বালুকাময় মৃত্তিকা:- এতে বালুর পরিমাণ বেশি, জল দ্রুত প্রবাহিত হয়।
2. দোঁ-আশ মৃত্তিকা:- এতে বালু ও কাদার মিশ্রণ থাকে, যা কৃষিকাজের জন্য উপযোগী।
3. কাদাযুক্ত মৃত্তিকা:- এতে কাদার পরিমাণ বেশি, জল দীর্ঘ সময় ধরে আটকে রাখে।
4. ল্যাটেরাইট মৃত্তিকা:- উষ্ণ ও আর্দ্র অঞ্চলে পাওয়া যায়, এতে আয়রন অক্সাইডের পরিমাণ বেশি থাকে।
প্রশ্ন ৫: মৃত্তিকার ক্ষয় কাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়?
উত্তর:- মৃত্তিকার ক্ষয় প্রধানত নিম্নলিখিত প্রভাবগুলির মাধ্যমে ঘটে:
1. বায়ু:- বাতাসের মাধ্যমে মৃত্তিকার ক্ষয় হয়।
2. জল:- প্রবাহিত জল মাটি ধুয়ে নিয়ে যায়।
3. মানব কার্যকলাপ:- বনাঞ্চল ধ্বংস, চাষাবাদ এবং নগরায়ণের ফলে মৃত্তিকার ক্ষয় হয়।
প্রশ্ন ৬: মৃত্তিকা সংরক্ষণের পদ্ধতি কী কী?
উত্তর:- মৃত্তিকা সংরক্ষণের পদ্ধতি হল:
1. বৃক্ষরোপণ ও বনায়ন
2. সেচ ব্যবস্থার উন্নতি
3. বাঁধ এবং টেরাস নির্মাণ
4. মাটি সংরক্ষণের জন্য কৌশলগত চাষাবাদ
উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল মৃত্তিকা MCQ প্রশ্ন ও উত্তর | HS Geography Soil Question and Answer :
1) চুনাপাথর থেকে উদ্ভূত লাল রং – এর মাটিকে—
A) টেরারোসা
B) রেনজিনা
C) ল্যাটেরাইট
D) তুন্দ্রা মাটি বলে
Ans: A) টেরারোসা
2) মৃত্তিকা গঠনের একটি প্রধান নিয়ন্ত্রক হলো—
A) জলবায়ু
B) ভূপ্রকৃতি
C) মূল শিলাখণ্ড
D) সময়
Ans: A) জলবায়ু
3) প্রশমিত মাটির pH মান কত ?
A) 6.5
B) 6
C) 7.5
D) 7
Ans: D) 7
4) চারনোজেম মৃত্তিকা সৃষ্টি হয় কোন প্রক্রিয়ার দ্বারা ?
A) কার্বোনেশন
B) অক্সিডেশন
C) হাইড্রোলিসিস
D) হাইড্রেশন
Ans: A) কার্বোনেশন
5) ইলুভিয়েশন প্রক্রিয়া মৃত্তিকার কোন স্তরে সংঘটিত হয় ?
A) A স্তরে
B) B স্তরে
C) C স্তরে
D) D স্তরে
Ans: B) B স্তরে
6) মৃত্তিকা সৃষ্টির একটি নিষ্ক্রিয় নিয়ন্ত্রক হলো—
A) উন্নতা
B) ভূপ্রকৃতি
C) বৃষ্টিপাত
D) উদ্ভিদ
Ans: B) ভূপ্রকৃতি
7) সোলোনেজ মৃত্তিকাকে বলে—
A) আঞ্চলিক মৃত্তিকা
B) আন্তঃআঞ্চলিক মৃত্তিকা
C) অনাঞ্চলিক মৃত্তিকা
D) কোনোটিই নয়
Ans: B) আন্তঃআঞ্চলিক মৃত্তিকা
8) মৃত্তিকা পরিলেখের ‘ A ’ স্তর থেকে ‘ B ’ স্তরে পদার্থের অপসারণের পদ্ধতিকে বলে—
A) হিউমিফিকেশন
B) স্যালিনাইজেশন
C) ইলুভিয়েশন
D) এলুভিয়েশন
Ans: C) ইলুভিয়েশন
9) ‘স্পোডোসল ’ মৃত্তিকার একটি উদাহরণ হলো
(A) পড়সল
B) পলিমাটি
C) চারনোজেম
D) ল্যাটেরাইট
Ans: A) পড়সল
10) শারীরবৃত্তীয় শুষ্ক মুক্তিকায় যে উদ্ভিদ জন্মায় , তা হলো-
A) হাইড্রোফাইট
B) মেসোফাইট
C) জেরোফাইট
D) হ্যালোফাইট
Ans: D) হ্যালোফাইট
11) চুন ও লবণের পরিমাণের আধিক্যে গড়ে ওঠা মৃত্তিকা হলো-
A) পেডোক্যাল
B) পেডালফার
C) স্পোডোসোল
D) সোলানচাক
Ans: A) পেডোক্যাল
12) অধিক উয় অঞ্চলে কাঁচা সবজিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ কম হয় । ফলে মাটিতে হ্রাস পেতে থাকে –
A) খনিজ পদার্থ
B) অক্সিজেন
C) নাইট্রোজেন
D) ক্যালশিয়াম
Ans: C) নাইট্রোজেন
13) সর্বাধিক হিউমাস দেখা যায়—
A) চারনোজেম
B) ল্যাটেরাইট
C) পডজল – মৃত্তিকাকে
D) তুন্দ্রা
Ans: A) চারনোজেম
14) উত্তর – পূর্ব ভারতে মৃত্তিকা ক্ষয়ের প্রধান কারণ
A) অধিক বৃষ্টি
B) অধিক জলসেচ
C) ভূমিধস
D) জুমচাষ
Ans: D) জুমচাষ
15) ‘সোলানচাক ‘ মাটি সৃষ্টির প্রক্রিয়া হলো –
A) ল্যাটারাইজেশন
B) স্যালিনাইজেশন
C) ক্যালশিফিকেশন
D) অ্যালক্যালাইজেশন
Ans: B) স্যালিনাইজেশন
16) নাতিশীতোর তৃণভূমি অঞ্চলের মুক্তিকা হলো—
A) ভার্টিসল
B) অক্সসল
C) মলিসল
D) জেলিসল
Ans: C) মলিসল
উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল মৃত্তিকা অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | HS Geography Question and Answer :
1) মেইজেশন কী ?
Ans:- জলযুক্ত নিম্নভূমি বা জলাভূমিতে মাটি সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে গ্লেইজেশন বলে ।
2) বেলেমাটিতে বালির ভাগ ন্যূনতম কত থাকা উচিত ?
Ans:- 85 % .
3) মৃত্তিকার পরিলেখ বিকাশ বেশি হয় কোন অঞ্চলে ?
Ans:- শীতল নাতিশীতোয় জলবায়ুর সরলবর্গীয় অরণ্য অঞ্চলে । মৃত্তিকাক্ষয়ের মনুষ্যসৃষ্ট কারণগুলি লেখো । বৃক্ষচ্ছেদন , অনিয়ন্ত্রিত পশুচারণ , জুমচাষ , অবৈজ্ঞানিক কৃষিকাজ ।
4) ‘রেনজিনা‘ কী ?
Ans:- চুনাপাথর অঞ্চলে এক ধরনের ধূসর মাটি সৃষ্টি হয় যাকে রেনজিনা বলে ।
5) ক্যালশিয়াম কার্বোনেট সমৃদ্ধ মৃত্তিকা কী নামে পরিচিত ?
Ans:- পেডোক্যাল নামে পরিচিত ।
6) ভার্টিসল বর্গের মাটির একটি উদাহরণ দাও ।
Ans:- ভারতের কৃথ্বমৃত্তিকা ।
7) সিরোজেম মৃত্তিকা প্রধানত কোথায় সৃষ্টি হয় ?
Ans:- সিরোজেম মৃত্তিকা প্রধানত মরু ও মরুপ্রায় অঞ্চলে দেখা যায় ।
8) হিউমাস কাকে বলে ?
Ans:- উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহাবশেষ মুক্তিকাস্থিত সূক্ষ্ম জীবাণুদের দ্বারা পচনের ফলে যে বিয়োজিত পদার্থে পরিণত হয় তাকে হিউমাস বলে ।
9) ‘সোলাম‘ কী ?
Ans:- মৃত্তিকা পরিলেখে পরিণত মাটির নরম , শিথিল , ঝুরঝুরে ও হিউমাস সমৃদ্ধ ‘ A ‘ এবং ‘ B ’ স্তরকে একত্রে ‘ সোলাম ‘ বা মৃত্তিকাদেহ বলে ।
10) অপরিণত মাটি কী ?
Ans:- যথেষ্ট সময়ের অভাবে যে মুক্তিকায় সবক’টি স্তর গড়ে উঠতে পারে না তাকে অপরিণত মাটি বলে ।
11) এভোডায়ানামরফিক ( Endodianamorphic ) মাটি কাকে বলে ?
Ans:- মাটি গঠনের প্রাথমিক পর্যায়ে মূল উপকরণের ভিত্তিতে যে মাটি গঠিত হলো , তাকে এন্ডোডায়ানামরফিক মাটি বলে । যেমন — লিমোসেল।
12) মৃত্তিকাদূষণ কাকে বলে ?
Ans:- প্রাকৃতিক ও মানবিক ক্রিয়াকলাপের ফলে ভূপৃষ্ঠের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মের পরিবর্তনের মাধ্যমে যখন মৃত্তিকার গুণগত মান হ্রাস পায় এবং উদ্ভিদ ও প্রাণীকুলের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে তখন তাকে মৃত্তিকাদূষণ বলে ।
13) ল্যাটেরাইট মৃত্তিকার দু’টি বৈশিষ্ট্য লেখো ।
Ans:- a) এই মৃত্তিকা সাধারণত লোহা ও অ্যালুমিনিয়ামে সমৃদ্ধ । b) এই মৃত্তিকা ইটের মতো শক্ত ও লাল রঙের , অত্যন্ত অনুর্বর এবং কৃষিকাজ খুব একটা হয় না ।
14) খনিজকরণ কাকে বলে ?
Ans:- হিউমাস বায়ুর অক্সিজেনের সাথে জারিত হলে এর অন্তর্গত খনিজ মৃত্তিকায় মিশে যায় । একে খনিজকরণ বলে ।
15) মাল কী ?
Ans:- পর্ণমোচী অরণ্যে আলগা ও মুচমুচে ধরনের মাটির ওপরের ‘ 0 ‘ স্তরটিকে মৃত্তিকাবিজ্ঞানের ভাষায় মাল বলে ।
16) মৃত্তিকা ক্যাটেনা কাকে বলে ?
Ans:- একইরকম জলবায়ু ও মূল শিলাযুক্ত অঞ্চলের পার্বত্য ভূমিঢালে শুধুমাত্র জলনিকাশি ব্যবস্থা ও ভূমিরূপের পার্থক্যের উপর ভিত্তি করে ভিন্ন ভিন্ন মৃত্তিকা সৃষ্টি হয় , তাকে মৃত্তিকা ক্যাটেনা বলে ।
17) ভার্টিসল মৃত্তিকা ভারতে কী নামে পরিচিত ?
Ans:- ক্লে খনিজ দ্বারা গঠিত যে মাটি জল পেয়ে ফুলে ওঠে এবং শুকিয়ে গেলে শক্ত ও বড়ো ফাটলের সৃষ্টি হয় তাকে ভার্টিসল মৃত্তিকা বলে । ভারতের ডেকানট্র্যাক ( রেগুর ) ও অস্ট্রেলিয়ায় এই মৃত্তিকা দেখা যায় ।
উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল মৃত্তিকা রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | HS Geography Soil Essay Question and Answer :
1) চারনোজেম মৃত্তিকার বৈশিষ্ট্য কী কী ?
চারনোজেম মৃত্তিকা, যা সাধারণত "কালো মাটি" নামে পরিচিত, হলো বিশ্বের সবচেয়ে উর্বর মৃত্তিকার মধ্যে একটি। এর কিছু প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো:
1. উচ্চ জৈব পদার্থের উপস্থিতি:- চারনোজেম মৃত্তিকায় জৈব পদার্থের পরিমাণ অত্যন্ত বেশি, যা ৬% থেকে ১২% পর্যন্ত হতে পারে। এই জৈব পদার্থ মৃত্তিকার উর্বরতা বাড়ায় এবং উদ্ভিদের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে।
2. গাঢ় রং:- মৃত্তিকার গাঢ় কালো বা ধূসর রঙ এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এই রং জৈব পদার্থের উচ্চ পরিমাণের কারণে হয়।
3. উচ্চ পুষ্টিমান:- এই মৃত্তিকায় উচ্চ পরিমাণে নাইট্রোজেন, ফসফরাস, এবং পটাশিয়াম থাকে, যা উদ্ভিদের বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
4. উপযুক্ত আর্দ্রতা ধরে রাখার ক্ষমতা:- চারনোজেম মৃত্তিকার জল ধারণ ক্ষমতা ভালো, ফলে এটি দীর্ঘ সময় ধরে আর্দ্রতা বজায় রাখতে পারে এবং উদ্ভিদ শিকড়ের জন্য পানি সরবরাহ করতে সক্ষম।
5. কৃষিকাজের জন্য উপযুক্ত:- এই ধরনের মৃত্তিকা শস্য উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এতে শস্য যেমন গম, ভুট্টা, সূর্যমুখী এবং অন্যান্য ফসলের উচ্চ ফলন পাওয়া যায়।
6. নিঃসরণ প্রতিরোধী:- চারনোজেম মাটি অত্যন্ত ঘন এবং শক্তিশালী কাঠামো বিশিষ্ট, যার ফলে এটি বায়ু ও পানি ক্ষয় প্রতিরোধ করতে সক্ষম।
2) মৃত্তিকার pH বলতে কী বোঝায়?
মৃত্তিকার pH হল মাটির অম্লতা বা ক্ষারত্বের একটি পরিমাপক স্কেল, যা মাটির রাসায়নিক অবস্থাকে বোঝায়। এটি একটি সংখ্যামান যা সাধারণত ০ থেকে ১৪ পর্যন্ত হয়, যেখানে:
- pH ৭ বোঝায় মৃত্তিকা নিরপেক্ষ।
- pH ৭-এর কম (০ থেকে ৬.৯) মৃত্তিকার অম্লীয় অবস্থার নির্দেশ করে।
- pH ৭-এর বেশি (৭.১ থেকে ১৪) মৃত্তিকার ক্ষারীয় অবস্থার নির্দেশ করে।
মৃত্তিকার pH উদ্ভিদের বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি মৃত্তিকায় থাকা খনিজ পদার্থ ও পুষ্টির প্রাপ্যতা নির্ধারণ করে। বিভিন্ন উদ্ভিদের জন্য মৃত্তিকার পিএইচের ভিন্ন চাহিদা থাকে। উদাহরণস্বরূপ, কিছু উদ্ভিদ অম্লীয় মৃত্তিকায় ভালোভাবে বৃদ্ধি পায়, আবার কিছু উদ্ভিদ ক্ষারীয় মৃত্তিকা পছন্দ করে।
3) মৃত্তিকা সৃষ্টিতে বৃষ্টিপাতের প্রভাব লেখো -
মৃত্তিকা সৃষ্টিতে বৃষ্টিপাতের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে। বৃষ্টিপাত মৃত্তিকার গঠন ও বিকাশে সরাসরি অবদান রাখে এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া প্রভাবিত করে। নিচে বৃষ্টিপাতের প্রভাবগুলো ব্যাখ্যা করা হলো:
1. মৃত্তিকা ক্ষয় ও ভাঙন:
বৃষ্টিপাত পাথরের ভাঙন প্রক্রিয়ায় বড় ভূমিকা পালন করে। যখন বৃষ্টির পানি পাহাড় বা পাথরের উপর পড়ে, তখন তা ক্রমাগত ভিজিয়ে রেখে পাথরকে ভেঙে দেয়। দীর্ঘদিনের বৃষ্টিপাতের ফলে পাথর ভেঙে ছোট ছোট টুকরোতে পরিণত হয়, যা পরে মৃত্তিকায় পরিণত হয়।
2. মৃত্তিকায় পুষ্টি পরিবহন:
বৃষ্টিপাত মৃত্তিকায় পুষ্টি সরবরাহ করে এবং মাটির বিভিন্ন স্তরে পানি প্রবেশ করায়। পানি মাটির অভ্যন্তরে পৌঁছে খনিজ ও পুষ্টি উপাদানগুলিকে নিচের স্তরে নিয়ে যায়, যা উদ্ভিদের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। এই প্রক্রিয়াকে
লীচিং বলে।
3. মাটির আর্দ্রতা বৃদ্ধি:
বৃষ্টিপাতের ফলে মাটিতে আর্দ্রতা আসে, যা মৃত্তিকার জৈব উপাদানগুলিকে ভাঙতে এবং নতুন মৃত্তিকার গঠনকে ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে। আর্দ্র মাটি জীবজগতের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করে, যা মৃত্তিকা গঠনের প্রক্রিয়াকে সহজ করে।
4. মৃত্তিকার ক্ষয় (Soil Erosion):
যদি বৃষ্টিপাত অতিরিক্ত হয়, তবে তা মাটির ক্ষয় ঘটাতে পারে। ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে পানি দ্রুত প্রবাহিত হয়, যা মাটির উপরিভাগকে ধুয়ে নিয়ে যায়। এর ফলে মৃত্তিকার উর্বর স্তর হারিয়ে যায় এবং মাটির গঠন প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হয়।
5. জৈব পদার্থের পচন:
বৃষ্টিপাত মাটির জৈব পদার্থকে ভেজা রাখে, যা উদ্ভিদ ও প্রাণীর মৃত অংশ দ্রুত পচাতে সাহায্য করে। এই পচন প্রক্রিয়া মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে এবং নতুন মৃত্তিকা তৈরিতে সহায়তা করে।
6. মৃত্তিকার রঙ ও গঠন প্রভাবিত করা:
বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ও ধরণ মৃত্তিকার রঙ এবং গঠনের উপর প্রভাব ফেলে। উষ্ণ ও আর্দ্র অঞ্চলে বেশি বৃষ্টিপাত হলে মৃত্তিকায় লৌহ অক্সাইড জমা হতে পারে, যার ফলে মাটি লালচে বা হলদে রঙ ধারণ করে।
বৃষ্টিপাত মৃত্তিকার সৃষ্টিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি পাথর ভাঙনের মাধ্যমে মৃত্তিকার গঠন ত্বরান্বিত করে, মাটিতে আর্দ্রতা বজায় রাখে, পুষ্টি সরবরাহ করে এবং জৈব পদার্থের পচনকে সহজ করে। তবে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত মাটির ক্ষয় ঘটিয়ে মৃত্তিকার উর্বরতা হ্রাস করতে পারে।
4) মৃত্তিকা গঠনের প্রক্রিয়াগুলি কি কি ?
মৃত্তিকা গঠনের প্রক্রিয়াগুলিকে মূলত তিনটি ভাগে ভাগ করা যায় । যথা — A) প্রাথমিক প্রক্রিয়া , B) মৌলিক প্রক্রিয়া , C) নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া ।
A) প্রাথমিক প্রক্রিয়া : প্রাথমিক প্রক্রিয়া চার প্রকার । যথা—
1) সংযোজন :- এই প্রক্রিয়ায় মুক্তিকার উপরের স্তরে সৌরশক্তি , জল , অক্সিজেন , জৈব ও খনিজ পদার্থের সংযোজন ঘটে ।
2) অপসারণ :- এই প্রক্রিয়ায় মৃত্তিকা থেকে জল বাষ্পীভূত হয় । জৈব পদার্থ জারিত হয়ে জল ও কার্বন – ডাই – অক্সাইড সৃষ্টি হয় এবং উদ্ভূত CO , বায়ুতে মিশে যায় ।
3) রুপান্তর :- এই প্রক্রিয়ায় মৃত্তিকার মধ্যে অবস্থিত খনিজ পদার্থগুলি ও জৈব পদার্থ বিয়োজিত হয়ে হিউমিফিকেশন ও খনিজকরণ পদ্ধতির মাধ্যমে রূপান্তরিত হয় ।
4) স্থানান্তর :- এই প্রক্রিয়ায় খনিজ পদার্থ ও জৈব পদার্থগুলো জলে দ্রবীভূত হয়ে মুক্তিকার গভীরে স্থানান্তরিত হয় ।
B) মৌলিক প্রক্রিয়া : মৌলিক প্রক্রিয়া চার প্রকার । যথা—
1) হিউমিফিকেশন :- মৃত উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহাবশেষ মৃত্তিকার মধ্যে বিক্রিয়া করে কালো রঙের যে জৈব পদার্থের সৃষ্টি হয় , তাকে হিউমাস বলে । হিউমাস গঠনের প্রক্রিয়াকে বলা হয় হিউমিফিকেশন ।
2) খনিজকরণ :- খনিজকরণ হলো মুক্তিকাতে খনিজ পদার্থের প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া ।
3) এলুভিয়েশন :- এই প্রক্রিয়ায় মুক্তিকার উপরিস্তর থেকে ‘ A ‘ স্তর বিভিন্ন খনিজ পদার্থ ধৌত প্রক্রিয়ায় থেকে মুক্তিকার নীচের স্তরে স্থানান্তরিত হয় ।
4) ইলুভিয়েশন :- এই প্রক্রিয়ায় মুক্তিকার উপরিস্তর অর্থাৎ ‘ A ‘ স্তর থেকে বিভিন্ন খনিজ পদার্থ ধৌত প্রক্রিয়ায় মুক্তিকার নীচের স্তরে অর্থাৎ ‘ B ‘ স্তরে সম্ভিত হয় ।
C) নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া :- নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া ছয় প্রকার । যথা—
1) ল্যাটেরাইজেশন : এই প্রক্রিয়ায় মৃত্তিকার উপরিস্তর থেকে ক্যালশিয়াম , ম্যাগনেশিয়াম প্রভৃতি অপসারিত হয় এবং মৃত্তিকা মধ্যস্থিত লোহা ও অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড থেকে যায় , এইভাবে ল্যাটেরাইট মুক্তিকার সৃষ্টি হয় ।
2) পডসলাইজেশন : যে প্রক্রিয়ায় মৃত্তিকার উপরিস্তরে সিলিকা সঞ্চিত হয় এবং লোহা ও অ্যালুমিনিয়াম অপসৃত হয় ধৌত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে , তাকে পডসলাইজেশন বলে ।
3) গ্লেইজেশন : জলমগ্ন এলাকায় যেখানে মৃত্তিকাতে অক্সিজেনের জোগান কম , সেখানে বিজারণ প্রক্রিয়ায় মৃত্তিকা গঠনকে গ্রেইজেশন বলে ।
4) স্যালিনাইজেশন : এই প্রক্রিয়ায় মৃত্তিকার উপরিস্তরে যৌগিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দ্রবীভূত লবণ সঞ্চিত হয় । এই প্রক্রিয়ায় সোলানচক মৃত্তিকা গঠিত হয় ।
5) ক্যালশিফিকেশন : চারনোজেম , চেস্টনাট প্রভৃতি মৃত্তিকা গঠনের প্রক্রিয়া , ক্যালশিফিকেশন নামে পরিচিত ।
6) অ্যালকালাইজেশন : এই প্রক্রিয়ায় মরু অঞ্চলের মৃত্তিকাতে সোডিয়াম লবণ সঞ্চয় হয় ।
5) মৃত্তিকা গঠনে জীবজগতের ভূমিকা আলোচনা করো -
মৃত্তিকা গঠনে জীবজগতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। জীবজগতের বিভিন্ন প্রাণী, উদ্ভিদ, মাইক্রোঅর্গানিজম এবং অন্যান্য জীবের প্রভাবের ফলে মৃত্তিকার গঠন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এই প্রক্রিয়ায় জীবজগত বিভিন্নভাবে অবদান রাখে:
1. উদ্ভিদ ও মৃত্তিকা গঠন:
উদ্ভিদ মূলত মৃত্তিকার গঠন প্রক্রিয়ায় প্রাথমিক অবদান রাখে। উদ্ভিদের মূল মাটি ধরে রাখতে সাহায্য করে, যা মৃত্তিকা ক্ষয় রোধ করে। এছাড়া, উদ্ভিদের মৃত অংশ পচে জৈব পদার্থ তৈরি করে, যা মৃত্তিকাকে উর্বর করে তোলে। উদ্ভিদের পাতা, গাছের শাখা ও মূল মাটিতে মিশে পুষ্টি সরবরাহ করে।
2. প্রাণী ও মৃত্তিকা গঠন:
কেঁচো, পিঁপড়া, এবং অন্যান্য কীটপতঙ্গ মৃত্তিকার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তারা মাটির ভেতরে গর্ত তৈরি করে এবং মৃত্তিকাকে মিশ্রিত করে, যা মাটির বায়ুচলাচল উন্নত করে। এছাড়া, এই প্রাণীরা মাটির বিভিন্ন স্তরের মিশ্রণ ঘটিয়ে মাটির গঠন ও পুষ্টি বৃদ্ধি করে।
3. মাইক্রোঅর্গানিজম ও মৃত্তিকা গঠন:
মাইক্রোঅর্গানিজম (যেমন ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক) মাটির গঠনে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তারা উদ্ভিদ ও প্রাণীর মৃতদেহ পচিয়ে জৈব পদার্থ তৈরি করে। এই জৈব পদার্থ মৃত্তিকার পুষ্টি বাড়ায়, যা উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এছাড়া, মাইক্রোঅর্গানিজম মাটিতে থাকা খনিজ পদার্থ ভেঙে উদ্ভিদের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি তৈরি করে।
4. মূলের ক্ষয় প্রক্রিয়া:
উদ্ভিদের মূল মৃত্তিকার খনিজ পদার্থকে অবমুক্ত করতে সহায়তা করে। তারা মাটির গভীরে প্রবেশ করে এবং মাটির শক্ত অংশকে ভেঙে ছোট ছোট অংশে রূপান্তরিত করে, যা মৃত্তিকার ক্ষয় ও গঠনকে ত্বরান্বিত করে।
5. জীবাশ্ম ও মৃত্তিকা গঠন:
জীবাশ্মজাত দ্রব্যগুলি মৃত্তিকায় পুষ্টি সরবরাহ করে এবং মাটির গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। উদ্ভিদ ও প্রাণীর পচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি হওয়া পুষ্টিকর উপাদানগুলি মৃত্তিকার স্বাস্থ্য ও উর্বরতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
মৃত্তিকা গঠনে জীবজগতের বিভিন্ন উপাদান সরাসরি ও পরোক্ষভাবে ভূমিকা রাখে। উদ্ভিদ ও প্রাণীজগতের সাথে জীবাণু ও মাইক্রোঅর্গানিজমের মিথস্ক্রিয়া মৃত্তিকার পুষ্টি ও গঠনকে উন্নত করে এবং মৃত্তিকার সার্বিক স্বাস্থ্য রক্ষা করে।
6) মৃত্তিকাদূষণ কাকে বলে? কারণ ও প্রভাব গুলি আলোচনা করো
মৃত্তিকাদূষণ বলতে মৃত্তিকায় ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ, ভারী ধাতু, প্লাস্টিক, কীটনাশক, জৈব এবং অজৈব বর্জ্য ইত্যাদি জমা হওয়ার প্রক্রিয়াকে বোঝায়, যা মাটির গঠন, উর্বরতা এবং জীববৈচিত্র্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি সাধারণত মানবসৃষ্ট কর্মকাণ্ডের কারণে ঘটে এবং এর ফলে মৃত্তিকা তার প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য হারায়, যা পরিবেশ, উদ্ভিদ, প্রাণী এবং মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
মৃত্তিকাদূষণের প্রধান কারণ:
1. কৃষিকাজে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার: কৃষিতে অতিরিক্ত সার, কীটনাশক এবং আগাছানাশক ব্যবহারের ফলে মাটিতে বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ জমা হয়।
2. শিল্প বর্জ্য: কলকারখানা ও শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে নির্গত বর্জ্য যেমন ভারী ধাতু (সীসা, পারদ), রাসায়নিক দ্রব্য ইত্যাদি মাটিতে মিশে মৃত্তিকার দূষণ ঘটায়।
3. প্লাস্টিক ও অন্যান্য অজৈব বর্জ্য: প্লাস্টিক এবং অন্যান্য অব্যবহৃত দ্রব্য মাটির সাথে মিশে জমা হয়, যা মৃত্তিকার স্বাভাবিক গঠন নষ্ট করে।
4. গৃহস্থালী বর্জ্য: শহর ও গ্রামাঞ্চলের বাড়ি থেকে নির্গত জৈব এবং অজৈব বর্জ্য, যেমন সাবান, ডিটারজেন্ট, এবং গৃহস্থালী রাসায়নিক মাটির দূষণ ঘটায়।
5. তেল ও গ্যাসের ছড়ানো: তেল ও গ্যাসের উত্তোলন বা পরিবহনের সময় মাটিতে তেল ছড়িয়ে পড়লে মাটির গঠন ও পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়।
মৃত্তিকাদূষণের প্রভাব:
1. উর্বরতা হ্রাস: দূষিত মাটি তার উর্বরতা হারায়, যার ফলে ফসল উৎপাদন কমে যায়।
2. জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি: মাটির ভিতরে বসবাসকারী কীটপতঙ্গ, ব্যাকটেরিয়া, এবং অন্যান্য ক্ষুদ্র জীবাণু ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা পুরো পরিবেশ ব্যবস্থার জন্য ক্ষতিকর।
3. মানব স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব: দূষিত মৃত্তিকায় জন্মানো শাকসবজি ও ফলমূলে বিষাক্ত পদার্থ প্রবেশ করতে পারে, যা মানুষের স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
4. পানিদূষণ: মৃত্তিকার দূষণ প্রায়শই ভূগর্ভস্থ জল এবং পৃষ্ঠজলের দূষণ ঘটায়, যা পানীয় জলের মানকে হ্রাস করে।
মৃত্তিকাদূষণ পরিবেশের জন্য একটি বড় সমস্যা এবং এটি নিয়ন্ত্রণের জন্য সঠিক ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশবান্ধব কৃষি ও শিল্প কার্যকলাপ গুরুত্বপূর্ণ।
7) ল্যাটেরাইট মৃত্তিকার বৈশিষ্ট্য লেখো ।
ল্যাটেরাইট মৃত্তিকার বৈশিষ্ট্যগুলি হলো:-
1. উচ্চ লৌহ ও অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইডের উপস্থিতি: ল্যাটেরাইট মৃত্তিকায় লৌহ (Fe) ও অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড (Al) এর পরিমাণ বেশি থাকে। এই কারণে মাটির রং লালচে বা বাদামী হয়। এই মৃত্তিকা সাধারণত গরম এবং আর্দ্র অঞ্চলে বেশি পাওয়া যায়, যেখানে প্রচুর বৃষ্টিপাতের ফলে মাটির অন্যান্য পুষ্টি ধুয়ে যায় এবং লৌহ ও অ্যালুমিনিয়াম জমা হয়।
2. প্রচুর বৃষ্টিপাত ও অম্লীয় পরিবেশ: ল্যাটেরাইট মৃত্তিকা সাধারণত সেই অঞ্চলে পাওয়া যায় যেখানে উচ্চ পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয় এবং মাটি স্বাভাবিকভাবে অম্লীয় হয়। বৃষ্টিপাতের কারণে মাটির অন্যান্য পুষ্টি উপাদান ধুয়ে যায় এবং লৌহ ও অ্যালুমিনিয়াম কনসেনট্রেশন বৃদ্ধি পায়।
3. প্রধানত শুষ্ক মরশুমে শক্ত হয়ে যাওয়া: ল্যাটেরাইট মৃত্তিকা সাধারণত শুষ্ক মরশুমে শক্ত এবং টুকরো টুকরো হয়ে যায়। এটি মাটির প্রবাহিত পানি ধরে রাখতে কম সক্ষম।
4. পুষ্টিহীনতা ও উর্বরতার অভাব: ল্যাটেরাইট মাটি অত্যন্ত ক্ষয়প্রবণ এবং পুষ্টি উপাদানের অভাব থাকে। প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে মাটির পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, এবং নাইট্রোজেনের মতো পুষ্টি উপাদান ধুয়ে যায়, ফলে এটি কৃষির জন্য সাধারণত কম উর্বর হয়, তবে বিশেষ ধরনের ফসল যেমন চা, কফি, এবং রাবার জন্মাতে পারে।
5. উৎপাদনশীল ফসল: যদিও ল্যাটেরাইট মৃত্তিকা সাধারণভাবে পুষ্টিহীন, তবে এটি কিছু বিশেষ ধরনের ফসল যেমন চা, কফি, রাবার, এবং গাছপালা পছন্দ করে। ল্যাটেরাইট মাটির উৎপাদনশীলতা উন্নত করতে সঠিক সার প্রয়োগ এবং চাষের কৌশল প্রয়োজন।
Read more / আরও পড়ুন
HS 2025 Geography Landform Process Suggestion Question Answer - উচ্চমাধ্যমিক 2025 ভূগোল ভূমিরূপ প্রক্রিয়া সাজেশন প্রশ্ন ও উত্তর
এই আর্টিকেলটি তথ্য এবং শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। এতে দেওয়া তথ্যের সঠিকতা, পূর্ণতা, বা বর্তমানতার জন্য লেখক বা প্রকাশকের কোনও নিশ্চয়তা নেই। যে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে, পাঠককে নিজস্ব গবেষণা ও বিশ্লেষণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
এই আর্টিকেলে ব্যবহৃত তথ্য বিভিন্ন সূত্র থেকে সংগৃহীত এবং পাঠকদের সুবিধার জন্য প্রদত্ত। তবে, প্রতিটি ব্যক্তির বা পরিস্থিতির জন্য তথ্যের প্রাসঙ্গিকতা ভিন্ন হতে পারে। সুতরাং, লেখক বা প্রকাশক কোনওরূপ ক্ষতি বা ক্ষতির জন্য দায়ী হবে না যা এই আর্টিকেল পড়ার কারণে হতে পারে।
বিষয়বস্তু পরিবর্তিত হতে পারে, এবং এর সময়মতো হালনাগাদ করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য পাঠককে অতিরিক্ত উৎস বা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
এই আর্টিকেলটি কোনো বিশেষজ্ঞ পরামর্শ বা পরামর্শের বিকল্প নয় এবং এটি শুধুমাত্র সাধারণ তথ্য হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিত।