উচ্চমাধ্যমিক দ্বাদশ শ্রেণীর ভূগোল জীববৈচিত্র অধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12th Geography Biodiversity Chapter Question and Answer
উচ্চমাধ্যমিক দ্বাদশ শ্রেণীর ভূগোল জীববৈচিত্র অধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর | HS Class 12th Geography Biodiversity Chapter Question and Answer -
এই দ্বাদশ শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর – WBCHSE Class 12 Geography Biodiversity Chapter Question and Answer, Suggestion, Notes –
বহুবিকল্পভিত্তিক, সংক্ষিপ্ত, অতিসংক্ষিপ্ত এবং রোচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর নিচে দেওয়া হলো।
MCQ, Very Short, Short, Descriptive Question and Answer
গুলি আগামী West Bengal Class 12th Twelve XII Geography Examination –
পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য খুব ইম্পর্টেন্ট।
জীববৈচিত্র (Biodiversity) বলতে পৃথিবীর জীবজগতের বিভিন্ন রকমের প্রাণী, উদ্ভিদ, মাইক্রোঅর্গানিজম এবং তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক বোঝানো হয়। জীববৈচিত্র্য তিনটি প্রধান স্তরে বিভক্ত:
i. জিনগত বৈচিত্র্য: একই প্রজাতির ভেতরে বিভিন্ন ব্যক্তির জিনগত পার্থক্য বোঝায়।
ii. প্রজাতিগত বৈচিত্র্য: বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী এবং উদ্ভিদের মধ্যে বৈচিত্র্য বোঝায়।
iii. বাস্তুসংস্থানিক বৈচিত্র্য: জীব এবং তাদের পরিবেশের পারস্পরিক ক্রিয়া সম্পর্কিত বৈচিত্র্য।
জীববৈচিত্র্য আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে এবং মানুষের টিকে থাকার জন্য অপরিহার্য। এটি প্রাকৃতিক সম্পদ সরবরাহ, বাস্তুসংস্থান সেবা এবং জলবায়ু নিয়ন্ত্রণের মত বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
পরীক্ষায় অংশ নিতে নিচের স্টার্ট বোতামে ক্লিক করুন
Time's Up
score:
Quiz Result
Total Questions:
Attempt:
Correct:
Wrong:
Percentage:
উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল জীববৈচিত্র MCQ প্রশ্ন ও উত্তর | HS Geography Biodiversity Chapter MCQ Question and Answer
1) নীলগিরি Biosphere Reserve কোন রাজ্যে অবস্থিত ?
A) অসম
B) তামিলনাড়ু
C) উত্তরাখণ্ড
D) মেঘালয়
Ans: B) তামিলনাড়ু
2) পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি জীববৈচিত্র্যের দেশ হলো-
A) ব্রাজিল
B) ভারত
C) অস্ট্রেলিয়া
D) আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র
Ans: A) ব্রাজিল
3) ভারতে বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আইন কত সালে পাশ হয় ?
A) 1972
B) 1970
C) 1980
D) 1986
Ans: A) 1972
4) বর্তমানে পৃথিবীতে বনভূমির শতকরা অনুপাত
A) 30 %
B) 40 %
C) 50 %
D) 60 %
Ans: A) 30 %
5) জীববৈচিত্র্যের উষ্ণকেন্দ্রের (Hotspot ) একটি উদাহরণ হলো—
A) গির অরণ্য
B) শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন
C) করবেট জাতীয় উদ্যান
D) লোকটাক হ্রদ
Ans: D) লোকটাক হ্রদ
6) ভরতপুর পাখি সংরক্ষণাগারটি কোথায় অবস্থিত ?
A) কর্নাটকে
B) উত্তরপ্রদেশে
C) তামিলনাড়ুতে
D) রাজস্থানে
Ans: D) রাজস্থানে
7) জীববৈচিত্র্য শব্দটি সর্বাধিক গুরুত্ব পায়—
A) রিয়ো – ডি – জেনেইরো
B) জোহানেসবার্গ
C) মন্ট্রিল
D) জাকার্তা — সম্মেলন
Ans: A) রিয়ো – ডি – জেনেইরো
8) ভারতের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য রয়েছে
A) উড়িষ্যায়
B) পশ্চিমবঙ্গে
C) গুজরাটে
D) অন্ধ্রপ্রদেশে
Ans: B) পশ্চিমবঙ্গে
9) জীববৈচিত্র্যের জনক হলেন—
A) লাভজয়
B) রসেন
C) উইলসন
D) পার্কার
Ans: C) উইলসন
10) একটি ভৌগোলিক অঞ্চলের ভিন্ন বাসস্থানের জীবগোষ্ঠীর মধ্যে যে বৈচিত্র্য থাকে তাকে বলে—
A) আলফা বৈচিত্র্য
B) বিটা বৈচিত্র্য
C) গামা বৈচিত্র্য
D) ফাই বৈচিত্র্য
Ans: C) গামা বৈচিত্র্য
উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল জীববৈচিত্র অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | HS Geography Question and Answer
1) জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কাকে বলে ?
Ans: কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলের উদ্ভিদ ও প্রাণীর সংরক্ষণকে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ বলে ।
2) ভারতের বৃহত্তম জীববৈচিত্র্য হটস্পট কোনটি ?
Ans: ভারতের বৃহত্তম জীববৈচিত্র্য হটস্পট হলো হিমালয় পার্বত্যাঞ্চল ।
3) জীববৈচিত্র্য বিনাশের দু’টি কারণ লেখো ।
Ans: বৃক্ষচ্ছেদন , চোরাশিকার , অত্যধিক পশুচারণ , কৃষি ও বাসভূমির সম্প্রসারণ , অতিরিক্ত অর্থনৈতিক ব্যবহার ইত্যাদি ।
4) আলফা বৈচিত্র্য কাকে বলে ?
Ans: একই বাসস্থান বা অঞ্চলে অবস্থিত জীবগোষ্ঠীর অভ্যন্তরীণ বৈচিত্র্যকে আলফা বৈচিত্র্য বলে ।
5) গ্রিন ডেটা বুক কী ?
Ans: গ্রিন ডেটা বুক হলো একটি তালিকা যেখানে অবলুপ্তির বিপদ থেকে মুক্ত জীব প্রজাতির উল্লেখ থাকে ।
6) বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের দু’টি পদ্ধতির উল্লেখ করো ।
Ans: বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের দু’টি পদ্ধতি হলো জিন বৈচিত্র্য সংরক্ষণ , প্রাণী উদ্যান গঠন ।
7) বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ কাকে বলে ?
Ans: UNESCO- এর Man and Biosphere Reserve কর্মসূচির অন্তর্গত যে স্থলজ ও জলজ অঞ্চলে গোটা বাস্তুতন্ত্র ও তার সম্পূর্ণ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষিত হয় । তাকে বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ বলে ।
8) বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভে ‘ বাফার এলাকা ‘ কাকে বলে ?
Ans: বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভে যেখানে শিক্ষা ও গবেষণামূলক কাজকর্ম চলে কিন্তু মানুষের অর্থনৈতিক কাজকর্ম নিষিদ্ধ তাকে ‘ বাফার এলাকা ‘ বলে ।
9) ভারতের বন্য গাধা সংরক্ষণাগার কোন রাজ্যে অবস্থিত ?
Ans: ভারতের বন্য গাধা সংরক্ষণ গুজরাট রাজ্যের কচ্ছের ছোটো রান অঞ্চলে অবস্থিত ।
1) জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা কী? or জীববৈচিত্র্যের পাঁচটি গুরুত্ব লেখো
জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি পরিবেশ, অর্থনীতি, এবং মানবজীবনের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ আমাদের ভবিষ্যতের জন্য এক টেকসই পরিবেশ নিশ্চিত করে। এর কিছু প্রধান কারণ হলো:
i). প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা: জীববৈচিত্র্য প্রতিটি প্রজাতির মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক বজায় রাখে, যা প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় সহায়ক। প্রতিটি প্রজাতি খাদ্য শৃঙ্খল এবং বাস্তুতন্ত্রে ভূমিকা পালন করে। একটি প্রজাতির বিলুপ্তি অন্যান্য প্রজাতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
ii). মানবজীবনের ওপর প্রভাব: আমরা প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর নির্ভরশীল। কৃষি, ঔষধ, জ্বালানি, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণ জীববৈচিত্র্য থেকে আসে। উদাহরণস্বরূপ, অনেক ঔষধ উদ্ভিদ এবং প্রাণীদের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়।
iii). জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা: জীববৈচিত্র্য রক্ষা করে আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে রক্ষা পেতে পারি। উদ্ভিদ ও বনভূমি কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে এবং জলবায়ুর ভারসাম্য রক্ষায় ভূমিকা রাখে।
iv). অর্থনৈতিক মূল্য: জীববৈচিত্র্য পর্যটন এবং কৃষির মতো অর্থনৈতিক খাতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এর সুরক্ষা না থাকলে অনেক অর্থনৈতিক খাত ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।
v). বাস্তবিক এবং নৈতিক দায়িত্ব: প্রতিটি প্রজাতির বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে এবং তাদের অস্তিত্ব সংরক্ষণ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। এছাড়া, পরিবেশের সঠিক ব্যবস্থাপনা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক সুস্থ এবং টেকসই পৃথিবী নিশ্চিত করবে।
সুতরাং, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কেবলমাত্র পরিবেশগত নয়, বরং সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্যও অপরিহার্য।
2) জীববৈচিত্র্যের পাঁচটি গুরুত্ব লেখো
i) পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা : জীববৈচিত্র্য প্রজাতি বিলুপ্তি ঠেকাতে সহায়তা করে । প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় সাহায্য করে ।
ii) জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ : অরণ্যাঞ্চলের উদ্ভিদ বাষ্পমোচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মেঘ ও বৃষ্টিপাত সৃষ্টি করে ।
iii) জীবমণ্ডল সংরক্ষণ : সৌরশক্তি উদ্ভিদদেহে আবদ্ধ হয় । খাদ্যশৃঙ্খলের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে ওই শক্তিপ্রবাহ ঘটে জীবজগতের অস্তিত্ব রক্ষিত হয় ।
iv) অর্থনৈতিক মূল্য : মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য , বস্ত্র , বাসস্থান , ওষুধপত্র প্রভৃতি প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল । জীববৈচিত্র্যের মাধ্যমেই মানুষ তার চাহিদা মেটাতে
v) নান্দনিক গুরুত্ব : প্রকৃতিতে গাছপালা , পশুপাখিদের অপরূপ সৌন্দর্যের কারণে বিভিন্ন পার্ক , ইকো ট্যুরিজম , বায়োস্ফিয়ার পার্ক গড়ে উঠেছে ।
3) জীববৈচিত্র্য বিনাশের প্রভাব কী
জীববৈচিত্র্য বিনাশের প্রভাব অত্যন্ত গুরুতর এবং এটি পরিবেশ, মানবজীবন, অর্থনীতি, এবং সামাজিক কাঠামোর ওপর নানা ধরণের নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এর কয়েকটি প্রধান প্রভাব হলো:
1. প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়া: জীববৈচিত্র্যের বিনাশের ফলে বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য নষ্ট হয়। প্রতিটি প্রজাতি খাদ্য শৃঙ্খলে একটি নির্দিষ্ট ভূমিকা পালন করে, যা নষ্ট হলে অন্য প্রজাতির অস্তিত্বও হুমকির মুখে পড়ে। এতে মাটি, পানি, এবং বায়ুর গুণগত মানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
2. খাদ্য সংকট ও কৃষির ওপর প্রভাব: জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের ফলে অনেক উদ্ভিদ ও প্রাণী বিলুপ্ত হয়, যা খাদ্য উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ফসলের পরাগায়নকারী কীটপতঙ্গের বিলুপ্তি কৃষি উৎপাদন কমিয়ে দেয় এবং ফলাফল হিসেবে খাদ্য সংকট দেখা দেয়।
3. ঔষধ ও চিকিৎসা ক্ষেত্রের সংকট: অনেক ঔষধ এবং চিকিৎসা উপকরণ উদ্ভিদ ও প্রাণীজ সম্পদ থেকে পাওয়া যায়। জীববৈচিত্র্য কমে গেলে নতুন ঔষধ আবিষ্কার কঠিন হয়ে পড়ে এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে অগ্রগতি থেমে যেতে পারে।
4. জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ: জীববৈচিত্র্য নষ্ট হওয়ার ফলে কার্বন শোষণের হার কমে যায়, যা জলবায়ু পরিবর্তনের গতি বাড়ায়। এতে বন্যা, খরা, তাপপ্রবাহ এবং ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরিমাণ ও তীব্রতা বেড়ে যায়।
5. অর্থনৈতিক ক্ষতি: পর্যটন, কৃষি, এবং বনজ সম্পদের ওপর নির্ভরশীল অনেক দেশের অর্থনীতির জন্য জীববৈচিত্র্য বিনাশ বিপর্যয় ডেকে আনে। বনভূমি ও প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংসের ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ধস নামে।
6. মানব স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব: জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের ফলে রোগের প্রকোপ বাড়তে পারে। উদাহরণস্বরূপ, বন্য প্রাণী ও উদ্ভিদের বিলুপ্তির ফলে জীবজগতের অভ্যন্তরে ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের বিস্তার বাড়তে পারে, যা নতুন রোগের সৃষ্টি করতে পারে।
সার্বিকভাবে, জীববৈচিত্র্য বিনাশ কেবল পরিবেশগত নয়, মানবজীবন ও অর্থনীতির ওপর দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
4) ক্রান্তীয় অঞ্চলে জীববৈচিত্র্য সর্বাধিক লক্ষ করা যায় । এর কারণগুলি হলো –
ক্রান্তীয় অঞ্চলে জীববৈচিত্র্য সর্বাধিক লক্ষ করা যায়, এবং এর কয়েকটি প্রধান কারণ হলো:
1. উষ্ণ ও স্যাঁতসেঁতে জলবায়ু: ক্রান্তীয় অঞ্চলে সারা বছরই উষ্ণ এবং আর্দ্র আবহাওয়া বিরাজ করে, যা উদ্ভিদ ও প্রাণীদের জীবনচক্রের জন্য উপযোগী। এই ধরনের পরিবেশে প্রাণী ও উদ্ভিদের দ্রুত বৃদ্ধি এবং প্রজনন সম্ভব হয়।
2. বছরের পরিক্রমায় সামঞ্জস্যপূর্ণ ঋতুবিন্যাস: ক্রান্তীয় অঞ্চলে তাপমাত্রা ও দিনরাতের সময়ের মধ্যে খুব বেশি পরিবর্তন ঘটে না। এর ফলে জীবজগতের জন্য একটি স্থিতিশীল এবং প্রজননশীল পরিবেশ তৈরি হয়, যা প্রজাতির বৈচিত্র্য বৃদ্ধিতে সহায়ক।
3. বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি: এই অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়, যা উদ্ভিদ ও জীবজন্তুর জন্য প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহ করে। পর্যাপ্ত পানির প্রাপ্যতা উদ্ভিদের বৃদ্ধি এবং খাদ্যশৃঙ্খলকে শক্তিশালী করে, ফলে বাস্তুতন্ত্রে জীববৈচিত্র্য বাড়ে।
4. জটিল বাস্তুতন্ত্র: ক্রান্তীয় অঞ্চলের বনভূমি, বিশেষ করে ক্রান্তীয় বৃষ্টিঅরণ্য (rainforests), পৃথিবীর সবচেয়ে জটিল বাস্তুতন্ত্রগুলোর একটি। এই ধরনের বাস্তুতন্ত্রে প্রচুর সংখ্যক প্রজাতি একে অপরের সাথে আন্তঃসম্পর্ক বজায় রেখে বাস করে। এতে প্রতিটি স্তরের জন্য বিশেষায়িত এবং নির্দিষ্ট প্রজাতি বিকাশ লাভ করে।
5. প্রাকৃতিক নির্বাচন ও বিবর্তন: ক্রান্তীয় অঞ্চল দীর্ঘকাল ধরে প্রজাতির বিবর্তনের জন্য একটি উপযুক্ত ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। এখানে প্রতিযোগিতা বেশি হওয়ায় প্রজাতিগুলো টিকে থাকার জন্য বিশেষ ধরনের অভিযোজন ঘটিয়েছে, ফলে নতুন নতুন প্রজাতির উদ্ভব হয়েছে।
6. খাদ্য ও আশ্রয়ের প্রাচুর্য: ক্রান্তীয় অঞ্চলের বনভূমিতে উদ্ভিদের প্রাচুর্য থাকায় খাদ্য ও আশ্রয় সহজলভ্য। এই প্রাচুর্য প্রাণীদের জন্য একটি স্থায়ী ও নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করে, যা জীববৈচিত্র্যের জন্য উপযোগী।
এগুলোর সম্মিলিত প্রভাব ক্রান্তীয় অঞ্চলকে পৃথিবীর সবচেয়ে জীববৈচিত্র্যপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে গড়ে তুলেছে।
5) লাল তালিকা (Red List) কী ? জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের পদ্ধতিগুলি আলোচনা করো
A) লাল তালিকা (Red List) কী?
লাল তালিকা (Red List) হলো প্রজাতির বিপন্নতার অবস্থা নির্ধারণের একটি বৈশ্বিক মানদণ্ড, যা আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (IUCNNR বা International Union for Conservation of Nature and Natural Resources) দ্বারা পরিচালিত হয়। এটি বিভিন্ন প্রজাতির বিলুপ্তি ঝুঁকি মূল্যায়ন করে এবং তাদের সংরক্ষণ প্রয়োজনীয়তার দিকনির্দেশনা প্রদান করে। IUCN লাল তালিকা বিপন্ন, মহাবিপন্ন, বিলুপ্তপ্রায় এবং বিলুপ্ত প্রজাতিগুলোকে শ্রেণীবদ্ধ করে। এর মাধ্যমে পরিবেশবিদরা এবং সরকারগুলো জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে।
B) জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের পদ্ধতিগুলি
জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি এবং উদ্যোগ রয়েছে, যা পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা এবং প্রজাতির বিলুপ্তি ঠেকানোর জন্য প্রয়োজনীয়। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের প্রধান পদ্ধতিগুলি হলো:
i. অবস্থানভিত্তিক সংরক্ষণ (In-situ Conservation):
এই পদ্ধতিতে প্রজাতিগুলোকে তাদের প্রাকৃতিক বাসস্থানেই সংরক্ষণ করা হয়। এটি প্রকৃত পরিবেশে তাদের টিকে থাকার সুযোগ দেয় এবং প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্রের সাথে তাদের সম্পর্ক বজায় রাখে।
জাতীয় উদ্যান ও অভয়ারণ্য: উদ্যান এবং অভয়ারণ্য গড়ে তুলে প্রজাতিগুলোকে সংরক্ষণ করা হয়।
বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ: এই ধরনের সংরক্ষণ অঞ্চলে মানুষ ও প্রকৃতির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ করা হয়।
কমিউনিটি সংরক্ষণ: স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে নিয়ে প্রজাতি সংরক্ষণে কাজ করা হয়, যেখানে মানুষ পরিবেশের অংশ হিসেবে কাজ করে।
ii. অবস্থানভিন্ন সংরক্ষণ (Ex-situ Conservation):
এই পদ্ধতিতে প্রজাতিগুলোকে তাদের প্রাকৃতিক বাসস্থান থেকে আলাদা করে সংরক্ষণ করা হয়। এটি বিশেষত তখন কার্যকর যখন প্রজাতি প্রাকৃতিক পরিবেশে বিপন্ন বা বিলুপ্তপ্রায় হয়ে পড়ে।
চিড়িয়াখানা ও বোটানিক্যাল গার্ডেন: বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী ও উদ্ভিদকে চিড়িয়াখানা ও উদ্ভিদ উদ্যানে সংরক্ষণ করে পুনরায় প্রাকৃতিক পরিবেশে ছেড়ে দেওয়া হয়।
জিন ব্যাংক (Gene Bank): উদ্ভিদ ও প্রাণীর জিন বা বীজ সংরক্ষণ করে ভবিষ্যতে তাদের পুনরুৎপাদনের সুযোগ রাখা হয়।
ক্রায়োপ্রিজার্ভেশন: প্রাণী বা উদ্ভিদের প্রজাতির ডিএনএ, বীজ বা শুক্রাণু সংরক্ষণ করে রাখার জন্য নিম্ন তাপমাত্রায় সংরক্ষণের পদ্ধতি।
iii. আইনগত সংরক্ষণ:
প্রজাতি সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। এটি সরকারের পক্ষ থেকে পরিচালিত হয় এবং বিভিন্ন সংস্থা এর বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখে।
সংরক্ষণ আইন ও বিধি: সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা, শিকার নিষিদ্ধকরণ, বনভূমি সংরক্ষণ, এবং বিপন্ন প্রজাতির জন্য বিশেষ আইন প্রণয়ন করা হয়।
আন্তর্জাতিক চুক্তি ও সংস্থা: জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চুক্তি ও সংস্থা কাজ করে, যেমন CITES (Convention on International Trade in Endangered Species) এবং CBD (Convention on Biological Diversity)।
iv. প্রজাতি পুনরুদ্ধার (Species Recovery):
বিলুপ্তপ্রায় বা বিপন্ন প্রজাতিকে সংরক্ষণ এবং পুনরুদ্ধারের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়। এতে জীববৈচিত্র্যের ক্রমাগত নজরদারি এবং গবেষণা কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত থাকে।
বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির পুনরুৎপাদন: চিড়িয়াখানা বা গবেষণাগারে প্রজনন ঘটিয়ে পরে তাদের পুনরায় প্রাকৃতিক পরিবেশে ছাড়া হয়।
বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধার: ধ্বংসপ্রাপ্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত বাস্তুতন্ত্র পুনর্গঠনের মাধ্যমে প্রাণী ও উদ্ভিদের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করা হয়।
v. সচেতনতা ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম:
জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা অপরিহার্য। শিক্ষামূলক কার্যক্রম এবং প্রচারণার মাধ্যমে মানুষকে পরিবেশের প্রতি দায়িত্বশীল করে তোলা যায়। স্কুল, কলেজ, এবং স্থানীয় কমিউনিটির মধ্যে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ সম্পর্কে প্রচারণা করা হয়।
সারসংক্ষেপ
জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ প্রজাতি এবং বাস্তুতন্ত্র রক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। IUCNNR লাল তালিকা বিপন্ন প্রজাতিগুলোর সঠিক চিহ্নিতকরণ ও সংরক্ষণে সহায়ক। সংরক্ষণমূলক পদক্ষেপগুলো বিভিন্ন স্তরে নেওয়া হয় এবং এটি দীর্ঘমেয়াদী পরিবেশগত ভারসাম্য নিশ্চিত করে।
6) জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের পদ্ধতি গুলি কি কি ?
জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের পদ্ধতিগুলি মূলত দুইটি শ্রেণীতে বিভক্ত: অবস্থিতিগত (in-situ) এবং অবস্থিতিভিন্ন (ex-situ) সংরক্ষণ। প্রতিটি পদ্ধতির অধীনে বিভিন্ন উপ-পদ্ধতি রয়েছে। এখানে প্রধান পদ্ধতিগুলি উল্লেখ করা হলো:
১. অবস্থিতিগত সংরক্ষণ (In-situ Conservation)
এতে প্রজাতিগুলোকে তাদের প্রাকৃতিক বাসস্থানে সংরক্ষণ করা হয়।
জাতীয় উদ্যান ও অভয়ারণ্য: এসব এলাকায় প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা করা হয় এবং প্রাণী ও উদ্ভিদের স্বাভাবিক বাসস্থান বজায় রাখা হয়।
বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ: যেখানে প্রাকৃতিক সম্পদ এবং স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা করা হয়।
কমিউনিটি সংরক্ষণ: স্থানীয় জনগণের সাথে কাজ করে এবং তাদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করা হয়।
২. অবস্থিতিভিন্ন সংরক্ষণ (Ex-situ Conservation)
এতে প্রজাতিগুলোকে তাদের প্রাকৃতিক বাসস্থান থেকে আলাদা করে সংরক্ষণ করা হয়।
চিড়িয়াখানা ও বোটানিক্যাল গার্ডেন: বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী ও উদ্ভিদকে চিড়িয়াখানা বা উদ্ভিদ উদ্যানে সংরক্ষণ করা হয়।
জিন ব্যাংক (Gene Bank): উদ্ভিদ ও প্রাণীর বীজ, ডিএনএ, বা শুক্রাণু সংরক্ষণ করা হয়।
ক্রায়োপ্রিজার্ভেশন: প্রাণী ও উদ্ভিদের প্রজাতির জিন সংরক্ষণ করে রাখার জন্য নিম্ন তাপমাত্রায় সংরক্ষণ।
৩. আইনগত সংরক্ষণ
প্রজাতি সংরক্ষণের জন্য সরকারী এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
সংরক্ষণ আইন ও বিধি: বিপন্ন প্রজাতির জন্য আইন ও বিধি প্রণয়ন করা হয়।
আন্তর্জাতিক চুক্তি: CITES (Convention on International Trade in Endangered Species) এবং CBD (Convention on Biological Diversity) এর মতো আন্তর্জাতিক চুক্তি।
৪. প্রজাতি পুনরুদ্ধার
বিলুপ্তপ্রায় বা বিপন্ন প্রজাতিকে সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধার করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়।
বিপন্ন প্রজাতির পুনরুৎপাদন: চিড়িয়াখানায় প্রজনন করে পরে তাদের প্রাকৃতিক পরিবেশে ছাড়া হয়।
বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধার: ক্ষতিগ্রস্ত বাস্তুতন্ত্রকে পুনর্গঠন করা হয়।
৫. সচেতনতা ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম
মানুষের মধ্যে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা হয়।
শিক্ষামূলক কর্মসূচি: স্কুল, কলেজ ও কমিউনিটিতে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
প্রচার প্রচারণা: মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।
এসব পদ্ধতির মাধ্যমে জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা সম্ভব, যা পরিবেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই আর্টিকেলটি তথ্য এবং শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। এতে দেওয়া তথ্যের সঠিকতা, পূর্ণতা, বা বর্তমানতার জন্য লেখক বা প্রকাশকের কোনও নিশ্চয়তা নেই। যে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে, পাঠককে নিজস্ব গবেষণা ও বিশ্লেষণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
এই আর্টিকেলে ব্যবহৃত তথ্য বিভিন্ন সূত্র থেকে সংগৃহীত এবং পাঠকদের সুবিধার জন্য প্রদত্ত। তবে, প্রতিটি ব্যক্তির বা পরিস্থিতির জন্য তথ্যের প্রাসঙ্গিকতা ভিন্ন হতে পারে। সুতরাং, লেখক বা প্রকাশক কোনওরূপ ক্ষতি বা ক্ষতির জন্য দায়ী হবে না যা এই আর্টিকেল পড়ার কারণে হতে পারে।
বিষয়বস্তু পরিবর্তিত হতে পারে, এবং এর সময়মতো হালনাগাদ করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য পাঠককে অতিরিক্ত উৎস বা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
এই আর্টিকেলটি কোনো বিশেষজ্ঞ পরামর্শ বা পরামর্শের বিকল্প নয় এবং এটি শুধুমাত্র সাধারণ তথ্য হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিত।
Biodata Format
Biodata For Job
CV For Job
Marriage Biodata
Resume For Job
Marriage Biodata
About
Welcome to Free Biodata Maker! matrimonial bio data maker, Bio-data maker for job - Online marriage bio-data, Biodata format for Job. Cover page design, School, College project front page.
Easy to create, easy to use, fully customizable, with elegantly attractive designed.